শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের শাসনামলেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৬:৩১ এএম

শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের শাসনামলেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে: শেখ হাসিনা

শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের শাসনামলেই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

বৃটিশ প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে বিবিসিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। 

সাংবাদিক লরা কুনেসবার্গের আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তার সরকারের প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  'দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠার জন্যই আমার সংগ্রাম।’

(১৮ সেপ্টেম্বর) প্রচারিত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, গুমের বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা কতটা সত্য তা বিচার করতে হবে।

বিবিসিকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং আপনি জানেন যে আমার পুরো পরিবার, আমার মা, আমার তিন ভাই, দুই ভাতৃবধূ, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ মোট ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারপর থেকে ২১ বছর ধরে, যে দেশটি বারবার অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। প্রায় ২০ বার অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে এবং প্রতিবার রক্তপাত হয়েছে।’

বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘সেখানে গণতন্ত্র ছিল না, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না, একমাত্র  আমি আমার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছি এবং জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি।’

নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে বলেন, ‘অনেকেই অভিযোগ করতে পারে, কিন্তু এটা কতদূর সত্য, বিচার করতে হবে। এটা জানার আগে কেউ কোনো মন্তব্য করবেন না।’

শেখ হাসিনা লরা কুনেসবার্গকে বলেন, ‘সামরিক শাসকরা দীর্ঘদিন ধরে দেশ শাসন করেছে এবং তারা দল গঠন করেছে এবং ভোটের জন্য তারা কখনো জনগণের কাছে যায়নি। তারা (সামরিক স্বৈরশাসক) সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য সবকিছু ব্যবহার করেছে।’
 
গুম হওয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির সাংবাদিককে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার দেশে এবং অন্যান্য দেশে কত লোক নিখোঁজ হয়েছে? আপনি বিচার করতে পারেন। এই সমস্ত বিষয় আমি মনে করি, প্রথমে আপনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। সমস্ত তথ্য আপনার সংগ্রহ করা উচিত, তখন আপনি অভিযুক্ত করতে পারেন।’

কমনওয়েলথের গুরুত্ব কতটা আপনার এবং বাংলাদেশের কাছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মূল্য তো অনেক অনেক বেশি, যখন আমরা এক সঙ্গে থাকি, সেখানে অনেক সুযোগ থাকে, তাই এটা ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের একটা জায়গা আছে যেখানে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করতে পারি। কিছু ধারণা গ্রহণ করতে পারি, দেশ বা জনগণের জন্য কিছু ভালো কাজ করতে পারি। তাই, আমার মনে হয় এটা ভালো।’  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আপনি দেখতে পাচ্ছেন, যে একটি দেশ একা চলতে পারে না। কারণ এটি একটি আন্তঃনির্ভর বিশ্ব। সুতরাং এ পরিস্থিতিতে, সদস্য দেশগুলোর জন্য কমনওয়েলথের অর্থ অনেক বড়।’ 

রানী এলিজাবেথের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ‘১৯৬১ সালে যখন তিনি (রানী) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফর করেছিলেন। তখন আমরা খুব ছোট এবং আমার বাবার (জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমান) অফিসে গিয়েছিলাম, কারণ, আমরা জানতাম যে তিনি সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাই আমরা সবাই, পুরো পরিবার, দূরবীন নিয়ে জানালায় অপেক্ষা করেছি। ফলে আমরা তাকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি। আমি প্রায় সাতটি কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছি। প্রতিবারই আমি তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’