নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৯:০১ এএম
বিদ্যুৎচালিত অভিনব এক ‘কার্বনখেকো’ গাড়ি তৈরী করেছে নেদারল্যান্ডসের ‘আইন্ডহোভেন ইউনিভার্সিটি অফ টেকলোলজি’র একদল শিক্ষার্থী।
চোখের দেখায় বিএমডব্লিউ কুপ অথবা স্পোর্টসকারের মতো মনে হলেও, এটি বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণের কাজ করবে।
এজন্য গাড়িতে থাকবে দুটি ফিল্টার, যা এর জীবদ্দশায় শুষে নেবে অন্তত দুই কেজি কার্বন। জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর গাড়িগুলো যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে শঙ্কিতদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ, সেখানে ডাচ শিক্ষার্থীদের তৈরি গাড়িটির ভূমিকা একেবারেই উল্টো। যতোটা তৈরি করে, তার চেয়ে বেশি কার্বন শোষণ করবে জেম। পুরো নাম ‘দ্য জিরো এমিশন মোবিলিটি কার’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে জেম।
দুই আসনের গাড়িটি চলে ক্লিনট্রন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে। আর গাড়ির সিংহভাগ যন্ত্রাংশ নির্মাণ করা হয়েছে থ্রিডি প্রিন্টারে, রিসাইকল করা প্লাস্টিক দিয়ে। গাড়িটির উৎপাদন থেকে শুরু করে জীবদ্দশার শেষ পর্যন্ত যতোটা কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাস থেকে শুষে নেবে।
আইন্ডহোভেন ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা জানান, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ ফিল্টারের নকশাও করেছেন তারা। গাড়িটি চলমান অবস্থায় বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধরা পড়তে থাকবে বিশেষ ফিল্টারে। বাতাস থেকে কার্বন শুষে নেয়ার জন্য দুটি ফিল্টার আছে জেম-এ।
গাড়িটি ২০ হাজার মাইল চালানো হলে ফিল্টারগুলো দুই কেজি পর্যন্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে পারবে বলে ধারণা করছেন আবিষ্কারকেরা। একটা সময়ে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির চার্জিং স্টেশনেই ফিল্টার খালি করার সুযোগ থাকবে। এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে জেম নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এর নির্মাতারা।
দেশটির পূর্ব উপকূল থেকে সিলিকন ভ্যালি পর্যন্ত বিভিন্ন যায়গায় গাড়িটি প্রদর্শন করছেন তারা। ব্যাটারিচালিত যান থেকে কোনো কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয় না বললেই চলে। তবে, ব্যাটারি সেল উৎপাদনে যে পরিবেশ দূষণ হয়, তা জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর যানের সমতূল্য, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে বেশিও হতে পারে। এর ফলে, কার্বন দূষণের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে বিদ্যুচ্চালিত গাড়িগুলোকে কয়েক হাজার মাইলের বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে হয়।