নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৭:২৫ এএম
নওগাঁ, বগুড়া, যশোর ও ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দশকের বেশি সময় ধরে মিনিকেট নামের ধানের চাষ করছেন কৃষকরা। অথচ দেশে সরকার অনুমোদিত এ জাতের কোনো ধান নেই বলে জানান কৃষিবিদরা। মূলত নব্বই দশক-পরবর্তী সময়ে ভারত উদ্ভাবিত চিকন জাতের ধান দেশে মিনিকেট নামে চাষাবাদ শুরু করেন কৃষকরা।
ধানের উৎপত্তির ইতিহাস নিয়ে তাদের নেই কোনো মাথাব্যথা। যে জাতের ধানে ফলন আর দাম ভালো পাওয়া যায়, সেটি চাষেই আগ্রহ বাড়ে চাষীদের।
বর্তমান সময়ে বাজারে মিনিকেট চালের কদর বাড়ায় দেশের কমবেশি সব জেলাতেই কয়েক বছর ধরে এ নামের ধানের আবাদ বেড়েছে। চলতি বছর বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১১ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে মিনিকেট নামের ধানের আবাদ করা হয়েছে।
চাষীরা জানায়, এ ধানকে মিনিকেট নামেই আমরা চিনি। বীজ যেটা বিক্রি হচ্ছে, সেটাও মিনিকেট বলেই লেখা আছে।
কৃষকের মাঠে মিনিকেট নামে এ ধানের আদৌ কোনো জাত নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। মিল মালিক সমিতির দাবি, ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে সুযোগ বুঝে একশ্রেণির মিল মালিক চিকন ধান, যেমন: জিরাশাইল, নাজিরশাইল, বিআর-২৮, বিআর ২৯ জাতের ধান ছেঁটে মিনিকেট বলে বাজারজাত শুরু করেন। এই ধানের নাম কোথাও জিরাশাইল আবার কোথাও মিনিকেট বলা হয়। চালের ক্ষেত্রে ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী, ঢাকায় মিনিকেট নামে বাজারজাত করে থাকে।
বগুড়ার বিএডিসির উপপরিচালক (বীজ বিপণন) কৃষিবিদ মো. জাকির হোসেন জানায়, বিএডিসির একটি বীজ আছে বাংলাজিরা। এটি স্থানীয়ভাবে মিনিকেট নামে পরিচিত। যদিও সেটা মিনিকেট নয়। আসলে সেটার নাম হচ্ছে বাংলাজিরা।
দেশের প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার চালের বাজারে মিনিকেট চার হাজার কোটি টাকার। আর দেশের প্রায় ৮০০টি চালকল মিনিকেট প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা মো. আবু হোসেন জানান, সাধারণত যেসব চাল চিকন, সেগুলোই মিনিকেট নামে বাজারে ছাড়া হয়।
জাত না থাকলেও বাজারজুড়ে মিনিকেটের রাজত্ব। এর আসল রহস্য জানতে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মিনিকেটের কাহিনী।
মূলত মিনিকেট শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দ ‘মিনি’ ও ‘কিট’ থেকে। ভারত সরকার নতুন উদ্ভাবিত কোনো ধানের বীজ ছোট বা মিনি প্যাকেটে কৃষকদের দেয়, তা থেকে কথ্য ভাষায় এ নাম হয়। পরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই কিছু ধান এনে দেশের মাটিতে রোপণ করেন খুলনা,যশোরের কিছু এলাকার কৃষকরা।
অন্য দিকে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে মিনিকেট নামের কোনো ভিত্তি না থাকলেও বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসের নথিতে মিনিকেটকে জাত হিসেবেই তালিকাভুক্ত করা হয়।
বগুড়ার বিএডিসির উপপরিচালক (বীজ বিপণন) কৃষিবিদ মো. জাকির হোসেন জানান, বিএডিসির একটি বীজ আছে বাংলাজিরা। এটি স্থানীয়ভাবে মিনিকেট নামে পরিচিত। যদিও সেটা মিনিকেট নয়। আসলে সেটা হচ্ছে বাংলাজিরা।
বাংলাদেশের প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার চালের বাজারে মিনিকেট চার হাজার কোটি টাকার। আর দেশের প্রায় ৮০০টি চালকল মিনিকেট চাল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।